লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মেঘনা নদীসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা তিনটি ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় জোয়ারের পানি উঠে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন।
সোমবার বিকাল সরেজমিন মিয়ারহাট বাজার, আলতাফ মাস্টারঘাট এলাকা এবং হায়দরগঞ্জ বাজারের বেড়িবাঁধ শেষে সাইজুদ্দিন মোল্লার ঘাটসহ হাইমচর এলাকা পর্যন্ত এলাকায় গেলে এচিত্র দেখা যায়।।
গত চার দিন ধরে সকাল ৭টা ও বিকাল ৪টার পর জোয়ারের পানি উপকূলে উঠতে শুরু করে। সন্ধা ৭টার দিকে পানি আবার নেমে যায়। তবে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার পানিতে উপকূলে ব্যাপক ক্ষতি হয়। তীব্র আকার ধারণ করে নদীর ভাঙন। প্রতি বর্ষা মৌসুমের অমাবস্যা এবং পূর্ণিমার জোয়ারে মেঘনা নদীতে পানি বেড়ে গেলে উপকূলীয় এলাকাগুলো প্লাবিত হয় বলে জানান স্থানীয়রা।
তারা জানান, মেঘনা নদীর পূর্ব তীরে বেড়িবাঁধ না থাকায় রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী, উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন ও দক্ষিণ চরআবাবিল ইউনিয়ন অরক্ষিত হয়ে আছে। এ ছাড়া ইউনিয়নগুলোর ১৫টি গ্রামের বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট জোয়ারের পানিতে পুরোপুরি ডুবে থাকে।
কারও কারও ঘরে আবার পানি উঠেছে। এতে ফসলের ক্ষতিসহ দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। এ ছাড়া জোয়ারের পানি ওঠা এবং নামার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কাঁচা এবং পাকা সড়ক। কারও কারও পুকুরে পানি ঢুকে চাষকৃত মাছ ভেসে যায়। নদীর পাড়ে নতুনভাবে করা ঘরের উঠানেও পানি উঠেছে।
চরআবাবিল এলাকার বাসিন্দা লকিয়াত মিয়া (৫৬) বলেন, জোয়ারের পানিতে আমার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। একই এলাকার হানিফ মাঝি ও সুহেল মাঝি বলেন, জোয়ারের পানি আমাদের বসতঘরের আঙিনায় ঢুকে পড়েছে।
মাজেদা বানু ও নাসিমা বেগম দুই নারী জানান, প্রতি অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারেই তাদের বসতঘরে পানি ঢুকে পড়ে। এতে শিশুসন্তান নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয় তাদের।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বলেন, প্রতি অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারে নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে আড়াই ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। এর সঙ্গে সাগরে যদি কোনো সংকেত থাকে, তা হলে পানি আরও বেশি বাড়তে থাকবে।
এখন পূর্ণিমা এবং বঙ্গোপসাগরে প্রকৃতিক দুর্যোগের সংকেত থাকায় জোয়ারের অতিরিক্ত পানি উপকূলে উঠেছে। বুধবার থেকে আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত এ অবস্থা থাকবে। তবে আজকের চেয়ে ভরা পূর্ণিমার দিন পানি আরও বাড়বে।
নদী বন্দর/এসএইচ