মান্না অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘পাগলী’। ১৯৮৪ সালে এটি নির্মাণ করেন কাজী হায়াৎ। মুক্তির দিক থেকে মান্নার প্রথম সিনেমা ‘তওবা’। আজহারুল ইসলাম খানের পরিচালনায় এ সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৮৪ সালে। একক নায়ক হিসেবে মান্নার প্রথম সিনেমা ‘কাশেম মালার প্রেম’। মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত এ সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৯১ সালে। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপার হিট হলে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি মান্নাকে।
এরপর একক নায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন মান্না। উপহার দিয়েছেন অসংখ্য ব্যবসা সফল সিনেমা। এক সময় প্রযোজক-পরিচালকদের ভরসার স্থল হয়ে উঠেন এ অভিনেতা। নব্বই দশকের নাঈম-শাবনাজ, সালমান-শাবনূর, মৌসুমী-ওমর সানি জুটির পাশাপাশি নিজের অবস্থান পোক্ত করে নেন মান্না।
১৯৯৬ সালে সালমান শাহর মৃত্যুর পর কাণ্ডারি হয়ে উঠেন মান্না। পুরো ইণ্ডাস্ট্রিকে তুলে নেন নিজের কাঁধে। নিষ্ঠার সঙ্গে করেছেন নিজের সব কাজ। পরের বছর প্রযোজনায় আসেন মান্না। ঢাকাই সিনেমায় শুরু হয় মান্না অধ্যায়। তার প্রযোজনা নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘লুটতরাজ’ ব্যবসায়িক সফলতা পায়। তারপর একের পর এক সিনেমা মুক্তি পায় মান্নার। দর্শকপ্রিয়তার পাশাপাশি ব্যবসায়িক সফলতাও পেয়েছিল সিনেমাগুলো।
অশ্লীলতার যুগেও লড়াই করে গেছেন মান্না। প্রযোজক-পরিচালকদের একমাত্র ভরসা ছিলেন তিনিই। তার দৃঢ় ভূমিকার কারণেই চলচ্চিত্রের অন্ধকার কেটে গিয়েছিল। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেছেন এ অভিনেতা। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন মান্না।
২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৪৩ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে যান মান্না। তার মৃত্যুতে ভেঙে পড়ে চলচ্চিত্রাঙ্গন। তাকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে উঠেন এদেশের চলচ্চিত্র প্রেমীরা। মৃত্যুর একযুগ পরেও মান্না আছেন তার ভক্তদের হৃদয়ে। যতদিন বাংলা সিনেমা থাকবে ততদিন মান্না বেঁচে থাকবেন তার কাজের মাধ্যমে।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে মান্না পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আরো পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা। প্রয়াণ দিবসে প্রিয় নায়ক মান্নার প্রতি রইল শ্রদ্ধা। ওপার ভালো থাকুন মান্না।
নদী বন্দর / পিকে