হাঙ্গেরিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ইউরো কাপের যাত্রা শুরু করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল। অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো একাই করেছেন জোড়া গোল, জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। তবে তার এই পারফরম্যান্সে অন্তত কোকাকোলা কোম্পানির খুশি হওয়ার সুযোগ নেই।
কেননা ম্যাচের আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে সবাইকে কোক খাওয়া থেকে নিরুৎসাহিত করেছেন রোনালদো। তার সামনের টেবিলে রাখা কোকের বোতল সরিয়ে সবার উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন কোকের বদলে পানি পান করার। সবমিলিয়ে ৫-৭ সেকেন্ডের ছোট একটি কাজ।
আর এতেই কি না নেমেছে কোকাকোলার বাজারে ধস। এরই মধ্যে প্রায় চারশ কোটি ডলার তথা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা (৩৩ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা) খুইয়েছে কোকাকোলা কোম্পানি। তাদের শেয়ারবাজারের দরে নেমেছে এই বিশাল ধস।
সোমবার রোনালদোর এই বোতল সরানোর কাণ্ডের আগে কোকাকোলার প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৫৬.১ ডলার করে। সেদিনই সংবাদ সম্মেলনে কোকের বোতল সরিয়ে আলোচনার জন্ম দেন রোনালদো। আর এর ধাক্কা লাগে কোকাকোলার শেয়ার বাজারে।
অর্থনীতিভিত্তিক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, রোনালদোর ঐ বোতল সরানোর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর কোকাকোলার প্রতিটি শেয়ারের মূল্য কমে হয়ে গিয়েছে ৫৫.২ ডলার। যার ফলে সামগ্রিকভাবে তাদের শেয়ারের দাম কমেছে ১.৬ শতাংশ এবং মার্কেট ভ্যালু কমে গেছে ৪০০ কোটি ডলার।
অবশ্য কোকাকোলা কোম্পানি জানাচ্ছে, শুরুতে একটা ধাক্কা লাগলেও, ধীরে ধীরে আবার বাড়ছে তাদের শেয়ারের দাম। এখন প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ৫৫.২৯ ডলার করে। এছাড়া সবমিলিয়ে কোম্পানির নেট মূল্য ২ হাজার ৩৮০ কোটি ডলার।
শেয়ারবাজারে বিশাল ধস নামলেও রোনালদোর বোতল সরানোর কাণ্ডকে ইতিবাচকভাবেই নিয়েছে কোকাকোলা কোম্পানি। তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘প্রত্যেক মানুষেরই নিজ নিজ পানীয় বাছাই করার স্বাধীনতা রয়েছে। প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা স্বাদ ও পছন্দ রয়েছে।’
কোকাকোলার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার পর শুধু কোকাকোলাই নয়, খেলোয়াড়দের জন্য পানি এবং জিরো সুগার (চিনিবিহীন) কোকাকোলার ব্যবস্থাও রাখা হয়।
এখন কী কারণে রোনালদোর এমন আচরণ, সেটি অবশ্য সহজেই বুঝতে পেরেছে সবাই। কেননা ৩৬ বছর বয়সেও ভীষণ ফিটনেস সচেতন পর্তুগিজ যুবরাজ। তাই কোমল পানীয় বা চিপসজাতীয় খাবার একদমই মানতে পারেন না পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার।
একবার সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, কোমল পানীয়-চিপসজাতীয় খাবার পছন্দ করে বলে ছেলেকে বেশ বকাঝকাও করেন তিনি। শরীরের জন্য এগুলো ভালো কিছু নয়, বারবার নিজের সন্তানদের সেই কথাই বোঝান সিআরসেভেন।
বাবা হয়ে যিনি সন্তানদের এসব খেতে বারণ করেন, তিনি নিজে কি করে সেটা চোখের সামনে সহ্য করবেন? রোনালদোর আচরণ দেখে অনেকে অবাক হলেও পরে ব্যাপারটা বুঝতে কষ্ট হয়নি কারও।