1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
ফিলিস্তিনি শিশুদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারল ইসরায়েল, ২৪ ঘণ্টায় নিহত আরও ৮১ - Nadibandar.com
বুধবার, ২৮ মে ২০২৫, ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন
নদীবন্দর,ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫
  • ৬ বার পঠিত

ইসরায়েলের বোমার ভয়ে গাজার স্কুল চত্বরে আশ্রয় নিয়েছিল শত শত বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। শেষ পর্যন্ত সেই স্কুলই হয়ে উঠল তাদের ‘জীবন্ত কবর’। সেখানেই পুড়ে কয়লা হয়ে গেল তাদের শরীর। গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নারী ও শিশুসহ আরও ৮১ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে ৫৩ জনই গাজার প্রধান শহর গাজা সিটির বাসিন্দা ছিলেন। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ১৬৯ জন।

রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বিমান অভিযানে এই নিহতের ঘটনা ঘটে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

রোববার মধ্যরাতে গাজা শহরের আল-দারাজ এলাকার ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া মানুষের ওপর বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী।

দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে আগুন। সে আগুনেই জীবন্ত পুড়ে মরল শিশুরা। চিৎকার করে ওঠার আগেই নিস্তব্ধ হয়ে গেল ১৮টি নিষ্পাপ প্রাণ। বিবিসি, আলজাজিরা, মিডল ইস্ট মনিটর।

এ হামলায় ১৮ শিশুসহ অন্তত ৩৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই দিনে মৃত্যু উপত্যকাটির ঠিক উত্তরে-জাবালিয়ার একটি বাড়িতেও হামলা চালায় বর্বর সেনারা।

নিমিষেই মুছে যায় গোটা একটি পরিবার। নিহত হন আব্দ রাব্বো পরিবারের ১৯ জন সদস্যই। যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠেছে গাজার হাসপাতালগুলোও।

উত্তর গাজার ইন্দোনেশীয় ও আওদা হাসপাতাল চারপাশ ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। যে কোনো সময় সেখানেও পড়তে সেনাদের বোমার থাবা।

বিবিসি জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর রাতভর পৃথক দুটি বিমান হামলায় গাজায় ৫০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি হয় ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুলে।

যেখানে বেইত লাহিয়া থেকে আসা শত শত বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। হামলায় জীবন্ত পুড়ে গেছেন আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দারা। যাদের অনেকের শরীর এমনভাবে ঝলসে গেছে যে শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়ে। কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই হামলা চালানো হয় স্কুলটিতে।

গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত সিভিল ডিফেন্স বিভাগের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘কমপক্ষে ২০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। যাদের অধিকাংশ শিশু। এছাড়া দুটি শ্রেণিকক্ষ আগুনে পুড়ে গেছে। যেগুলো ঘুমানোর জায়গা হিসাবে ব্যবহার করা হতো।

প্রায় এক ঘণ্টা ধরে জ্বলা আগুনে’ প্রত্যক্ষদর্শী রামি রফিক বিবিসিকে বলেছেন, ‘মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। ছাইয়ের ওপর পড়ে থাকা দগ্ধ শরীরগুলো দেখে আমার ছেলে ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।’ টেলিগ্রাফে ছড়িয়ে পড়া ১১ সেকেন্ডের এক ভিডিও ক্লিপে গা শিউরে উঠেছে বিশ্বের।

সারাগায়ে আগুন নিয়ে ক্লাসরুম থেকে বের হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছিল শিশুটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারেনি! স্থানীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে উত্তর হাজার হামাস পুলিশের তদন্ত প্রধান মোহাম্মদ আল-কাসিহ, তার স্ত্রী ও সন্তানরাও রয়েছেন।

একই রাতে গাজার উত্তরাঞ্চলীয় শহর জাবালিয়াতে একটি পরিবারের বাড়িতে চালানো পৃথক হামলায় একই পরিবারের ১৯ জন সদস্য নিহত হন।

সোমবার পর্যন্ত গত ৪৮ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে ২০০টিরও বেশি স্থানে আঘাত হেনেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সম্প্রতি ‘গাজা পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়ার আহ্বান জানান ইসরায়েলি পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার নিসিম ভাতুরি।

এই ঘৃণাজনক বক্তব্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন ইসরায়েলের বামপন্থি নেসেট সদস্য ওফের কাসিফ। ইসরায়েলের পার্লামেন্ট (নেসেট) বলেছে, এটি রাজনৈতিক মতামত, নীতিগত অপরাধ নয়।

এদিকে খাদ্য ও ওষুধের চরম ঘাটতি চলছে গাজায়। যেখানে প্রতিদিন শত শত মরছে শিশু, সেখানে সাহায্য পৌঁছানোর সংখ্যাও যেন বৃষ্টির ফোঁটার মতো কম।

আইডিএফ বলেছে, চলতি মাসের ১৯ তারিখ থেকে ৩৮৮টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে। কিন্তু জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, একদিনেই প্রয়োজন ৫০০ থেকে ৬০০ ট্রাক।

অন্যদিকে, যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাতে রোববার স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে বৈঠক করেন ২০টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা। স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেস স্পষ্ট জানিয়েছেন, ইসরায়েল যদি হামলা বন্ধ না করে তাহলে তাদের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৯৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যার মধ্যে কমপক্ষে ১৬ হাজার ৫০০ শিশু। আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ২২ হাজার ৫৯৩ জন।

যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হামাস: যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে হামাস রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা।

সোমবার ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘এর মাধ্যমে হামাস দুই ধাপে মোট ১০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি দেবে। বিনিময়ে দীর্ঘ সাজাপ্রাপ্ত বহু ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরাইল।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে, ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা, ইসরায়েলি সেনাদের স্থায়ীভাবে গাজা থেকে প্রত্যাহার এবং জিম্মি-বন্দি বিনিময়ের গুরুত্বপূর্ণ শর্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ইসরায়েলি সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য আসেনি।

তবে প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন হলে এই ভয়াবহ সহিংসতা ও মানবিক বিপর্যয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসমাপ্তির সম্ভাবনা তৈরি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নদীবন্দর/এএস

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com