তেলেঙ্গানা রাজ্যের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন ভারতের ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও কংগ্রেস নেতা মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন। শুক্রবার হায়দরাবাদের রাজভবনে রাজ্যপাল জিষ্ণু দেব বর্মা তাকে শপথ পড়ান।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী এ রেভন্ত রেড্ডি, মন্ত্রিসভার সদস্যরা, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা, রাজ্য বিধানসভার স্পিকার জি প্রসাদ কুমার, সরকার উপদেষ্টা এবং জ্যেষ্ঠ আইএএস ও আইপিএস কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আজহারউদ্দিন ইংরেজিতে ‘আল্লাহর’ নামে শপথ নেন। শপথ শেষে তিনি ‘জয় তেলেঙ্গানা’ ও ‘জয় হিন্দ’ স্লোগান দেন। পরে মুখ্যমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং ধন্যবাদ জানান।

১৯৬৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি হায়দরাবাদে জন্মগ্রহণ করেন আজহারউদ্দিনের। সাধারণ পরিবারের সন্তান হয়েও ভারতের অন্যতম সফল ক্রিকেট অধিনায়ক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। পরে রাজনীতিতেও সক্রিয় হন।

হায়দরাবাদের আবিডস এলাকার অল সেইন্টস হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন আজহারউদ্দিন। পরে নিজাম কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক (বি.কম) ডিগ্রি নেন। মাতুল জয়নুল আবেদীনের অনুপ্রেরণায় ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

১৯৮৪ সালে ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় আজহারউদ্দিনের। শুরুতেই টানা তিন টেস্টে তিনটি সেঞ্চুরি করে ক্রিকেটবিশ্বে আলোড়ন তোলেন। ১৯৮৯ সালে ভারতের অধিনায়ক হন। ১৬ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ারে ৯৯টি টেস্ট ও ৩৩৪টি একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ম্যাচ খেলেছেন আজহারউদ্দিন। কবজির মোচড়ে খেলার অনন্য কৌশল ও শান্ত নেতৃত্বের জন্য তিনি বিশেষভাবে প্রশংসিত হন।

ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর আজহারউদ্দিন রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০০৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেসে যোগ দিয়ে একই বছর উত্তর প্রদেশের মরাদাবাদ আসন থেকে লোকসভা সদস্য নির্বাচিত হন। দলের ভেতরে জনপ্রিয়তা ও নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৮ সালে তাকে তেলেঙ্গানা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির (টিপিসিসি) কার্যনির্বাহী সভাপতি করা হয়।

২০২৩ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে তিনি হায়দরাবাদের জুবিলি হিলস আসন থেকে প্রার্থী হলেও ভারত রাষ্ট্র সমিতির মাগান্তি গোপীনাথের কাছে পরাজিত হন।

চলতি বছরের আগস্টে মুখ্যমন্ত্রী রেভন্ত রেড্ডির মন্ত্রিসভা গভর্নরের কোটা থেকে প্রফেসর এম কোদন্দারামের সঙ্গে আজহারউদ্দিনের নাম আইন পরিষদের সদস্য (এমএলসি) হিসেবে প্রস্তাব করে। তবে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন থাকায় রাজভবনে অনুমোদন আটকে আছে।

গভর্নরের অনুমোদন না আসলেও সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আজহারউদ্দিনকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তির অনুমোদন দেয়। নিয়ম অনুযায়ী, আগামী ছয় মাসের মধ্যে তাকে আইন পরিষদের সদস্য হতে হবে।

নদীবন্দর/এএস